এই শিখনফল অর্জনের মাধ্যমে আমরা কার এসির লিক নির্ণয় ও হিমায়ক চার্জ করতে পারব ।
কোন অনাকাংখিত কারণে সিস্টেম থেকে হিমায়ক বের হয়ে যাওয়ার সূক্ষ্ণ পথ তৈরি হওয়াকে লিকেজ বলে। কখনো কখনো লিকেজ এত ছোট হয় যে স্বাভাবিক পর্যবেক্ষণ দিয়ে তা নির্ণয় করা সম্ভব হয় না। রেফ্রিজারেন্টের পরিমাণ কম থাকা অবস্থায় অটো এয়ারকন্ডিশনার চালালে কম্প্রেসরে অসহনীয় চাপের উদ্ভব হয়ে কম্প্রেসর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুধু তাই নয়, হিমায়ক ঘাটতির কারণে হোস পোরোসিটি ( Hose Porosity ), শ্যাফট সিল আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে থাকে ।
হিমায়ক লিকেজ নিম্ন লিখিতভাবে নির্ণয় করা যায় -
১) লিকুইড লিক ডিটেকটর
২) হিমায়ক রং দিয়ে গিক শনাক্তকরন
৩) আল্ট্রভায়োলেট পিক ডিটেকটর
৪) ইলেকট্রনিক লিক ডিটেকটর
৫) ক্লেম শিক ডিটেকটর
কার এসির লিক ডিটেকশনে সাধারণত লিকুইড লিক ডিটেকটর, হিমায়ক রং দিয়ে লিক শনাক্তকরন ও ইলেকট্রনিক দিক ডিটেকটর ব্যবহার করা হয়। নিচে এদের বর্ণনা দেয়া হল ।
লিকুইড লিক ডিটেক্টর ব
ড় ধরণের লিক নির্ণয়ের জন্য সাবানের ফেনা বা তরল বুদবুদের সলিউশন হিমায়ক লাইনে, ফিটিংসে, হোস পাইপ সংযোগে, শ্যাফট সিনে এবং অন্যান্য সম্ভাব্য নিক এলাকার মধ্যে স্প্রে করলে যদি বুদবুদ বা বাবুল ভেসে উঠে তবে তা সিস্টেমে লিকের অবস্থান নির্দেশ করে।
হিমারক রং দিয়ে লিক শনাক্তকরণ
অল্প পরিমাণ হিসারক রং সিস্টেমের লো- প্রেশার সাইডে যুক্ত করতে হয়। এই রং হিমায়ককে লাল রং এ রূপান্তর করে। যে- সব স্থানের দিক নির্ণয় করতে হবে সেসব স্থানে সাদা কাপড় মুড়িয়ে দিলে যদি সাদা কাপড়ে লাল রংয়ের আস্তরণ পড়ে তাহলে এভাবে সিস্টেমের দিক নির্ণয় করা যায়।
ইলেকট্রনিক লিক ডিটেকটর
ইলেকট্রনিক লিক ডিটেকটর খুবই সংবেদনশীল এবং এর ব্যবহার খুবই সহজ। ডিটেক্টরের সেন্সিং ডিভাইসটি সম্ভাব্য লিকেজ স্থানগুলোর মধ্য দিয়ে চালনা করতে হয়। সেন্সরটি হিমায়কের সংস্পর্শে এলে ডিটেকটরটি উচ্চ শব্দে অনবরত চলতে থাকে। এভাবেই ডিটেকটর লিকের উপস্থিতি প্রমাণ করে।
অটো এয়ারকন্ডিশনারের হিমারন সিস্টেমে চার্জিং-এ বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। হিমারক চার্জিং হল সঠিক মাত্রায় পরিষ্কার তরুণ হিমায়ক প্রয়োগ প্রক্রিয়া। বিভিন্ন ধরনের ইঞ্জিনের ক্ষেত্রে হিমায়ক চার্জিং এর প্রকারভেদ এবং হিমায়কের পরিমাণ ভিন্ন হয়, যা ভেহিক্যাল সার্ভিস ম্যানুয়াল অনুসরণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। হিমায়কের পরিমাণ পাউন্ড, আউল, কেজি ইত্যাদি এককে পরিমাপ করা হয়। উল্লেখ্য, হিমায়ক বা ৰাষ্ট্ৰীয় হিমারক শুধুমাত্র লো- সাইড দিয়ে প্রয়োগ করতে হয় । চার্জিং ইকুইপমেন্টের উপর ভিত্তি করে এবং ভেহিক্যাল সার্ভিস ম্যানুয়েলের উপর ভিত্তি করে চার্জিং পদ্ধতি বিভিন্ন হয়। এটি সাধারণত তিন প্রকার হয়ে থাকে-
(ক) হিমায়ক ক্যান দিয়ে চার্জিং
(খ) হিমায়ক সিলিন্ডার বা গ্রাম দিয়ে চার্জিং
(গ) চার্জিং সিলিন্ডার দিয়ে চার্জিং
হিমায়ক ক্যান দিয়ে চার্জিং
কার এয়ারকন্ডিশনারের হিমায়ন সিস্টেমে এক সময় চার্জিং পদ্ধতিতে ছোট হিমায়ক ক্যান দিয়ে চার্জিং বেশ জনপ্রিয় পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত হত। চিত্র ২.৫১ এ হিমায়ক ক্যান দিয়ে চার্জিং পদ্ধতি দেখানো হয়েছে। চিত্র হতে, এক পাউন্ডের ক্যানগুলো চার্জিং-এর সমর রেফ্রিজারেশন ম্যানিফোল্ডের সাথে যুক্ত করা হয়। একটি চার্জিং হোস সেট করে গেজ ম্যানিফোল্ডের সাথে যুক্ত করতে হবে। ক্যানসমূহ 125° ফাঃ (520 সে.) তাপমাত্রার গরম পানির পাত্রে বসানো থাকে। এ গরম পানি হিমায়ককে বাষ্পীভূত করে দ্রুত সিস্টেমে প্রবেশে সহযোগিতা করে ।
যদি পার্লিং প্রয়োজন হয় তবে চার্জিং হোল দিয়ে বাতাস ট্র্যাপিং করতে হয়। এ কাজের সমর চার্জিং হোসকে লুজ করে পেজ ম্যানিফোল্ডের সাথে যুক্ত করতে হয় সেই সাথে ছোট ক্যানের ভাতকে আলতো বা অল্প পরিমাপ খুলতে হয়। পার্কিং শেষে আবার চার্জিং হোসকে দৃঢ়ভাবে সংযোগ দিতে হয়। এরপর গেজ ভালভকে বন্ধ করে ছোট ক্যানের অর্থাৎ হিমারক ক্যানের ভাল্ভসমূহ খুলে দিতে হয়। এখন ইঞ্জিন চালু করার মাধ্যমে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হয়, যতক্ষণ পর্যন্ত ইঞ্জিনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্থির না হয়। ইনমেন্ট কন্ট্রোল প্যানেল এর মুড এয়ার কন্ডিশনিং পজিশনে রাখতে হবে এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রকের অবস্থান Full Cold এবং ব্রোয়ার স্পিড লো অবস্থানে রাখতে হবে।
হিমারক কন্টেইনারের উপরের দিকে মুখ করে রাখার কারণে উপর দিক দিয়ে চার্জিং হোস দিয়ে হিমায়ক বাপ সিস্টেমে দ্রুত প্রবেশ করে। লো-সাইড সার্ভিস ভাত দিয়ে হিমায়ক চার্জ করতে হয়। সম্পূর্ণ চার্জিং-এর ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, এটি কোন মতেই 50 PSI (345 KPa) এর উপরে না উঠে। গেজ ভালভ বন্ধ করে হাই-সাইড ভাজ খুলতে হবে, এর রেফ্রিজারেশন ম্যানিফোন্ডের ভাত বন্ধ করতে হবে।
হিমায়ক সিলিন্ডার বা ড্রাম দিয়ে চার্জিং
চিত্র ২.৫২এ হিমায়ক সিলিন্ডার বা ড্রাম দিয়ে হিমায়ক চার্জিং কৌশল দেখানো হয়েছে।
একটি বড় হিমায়ক সিলিন্ডার প্রায় ৩০ পাউন্ড (১৩.৬ কেজি) হিমায়ক বহনকারী সিলিন্ডারে চার্জিং পদ্ধতিতে ব্যবহৃত হয়। এই সিলিন্ডারগুলো ব্যবহার খুবই সহজ, কারণ এর শার্ট অফ ভালুত উপরেই অবস্থান করে। ভাতটি উপরে থাকার কারণে হিমায়কের অপ্রত্যাশিত ঘাটতি হয় না। গেজ মেনিফোল্ডের কেন্দ্রমুখে গ্ৰাম ৰা সিলিন্ডার যুক্ত করা হয়। চার্জিং শুরু করার আগে ড্রামের ওজন মেপে নিতে হয়। এর চার্জিং শেষে এর ওজন বা দিলে হিমায়ক চার্জের পরিমাণ নির্ণয় করা যায়। চার্জিং করতে যে পরিমাণ হিমায়কের প্রয়োজন হয় তা সিস্টেমে প্রবেশের পর ভালভ বন্ধ করে দিয়ে চার্জিং সমাপ্ত করতে হয়। চার্জিং পদ্ধতিতে অবশ্যই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নির্দেশনা অনুসরণ করতে হয়।
চার্জিং সিলিন্ডার দিয়ে চার্জিং
চিত্র ২.৫৩ এ চার্জিং কৌশল দেখানো হয়েছে, অটো এয়ারকন্ডিশনারে হিমায়ন সিস্টেমে চার্জিং সিলিন্ডার দিয়ে চার্জিং-এর ক্ষেত্রে চার্জিং স্টেশনের সাথে চার্জিং ড্রাম বা চার্জিং সিলিন্ডার বুক্ত থাকে। চার্জিং সিলিন্ডারের পায়ে হিমায়কের পরিমাণ চিহ্নিত করা থাকে, যা দিয়ে সহজেই সিলিন্ডারের ভেতরে হিমারকের পরিমাণ জানা যায়। সিস্টেমকে বাবুন্য করার সময় এর পরিমাণ নির্ণয় করা হয়। একটি চিত্র ২.৫৩ : চার্জিং সিলিন্ডার দিয়ে হিমায়ক চার্জিং ইলেকট্রিক হিটিং এলিমেন্ট চার্জিং সিলিন্ডারের সাথে যুক্ত থাকে। যখন হিটিং এলিমেন্ট চালু করা হয় তখন হিমায়ক উত্তপ্ত হয়। লিকুইড চার্জিং থেকে ভ্যাপার চার্জিং-এ সময় কম লাগে। ভেহিক্যাল সার্ভিস ম্যানুয়াল অনুসরণ করে এবং ইকুইপমেন্ট অপারেটিং ইন্সট্রাকশন অনুসরণ করে এ পদ্ধতিতে চার্জিং ক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়।